রংপুরের কণ্ঠ

অসময়ের তরমুজ চাষে সফল বিদেশফেরত লোকমান

অসময়ের তরমুজ চাষে সফল বিদেশফেরত লোকমান
অনলাইন থেকে সংগৃহীত

সারি সারি তরমুজগাছ, ফল-ফুলে ভরপুর। এদিক-সেদিক পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সবুজ ডোরাকাটা তরমুজ। মালচিং পদ্ধতিতে এসব গাছে বর্ষাপরবর্তী সময়েও তরমুজ ফলেছে। উঁচু জমিতে এ পদ্ধতিতে ফলটির চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা লোকমান হোসেন (৩০)। কম খরচে বেশি ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল গ্রামের বাসিন্দা লোকমান হোসেন। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বর্ষা মৌসুমে বাড়ির আঙিনায় ৫ শতাংশ জমিতে তৃতীয়বারের মতো তরমুজের আবাদ করছেন। পাশাপাশি কিছু ফুটির আবাদও চলছে।

প্রবাস থেকে দেশে, মন দিলেন চাষাবাদে

স্নাতক পাসের পর ২০১৮ সালে জীবিকার তাগিদে প্রবাসে চলে যান লোকমান। ২০২২ সালের প্রথম দিকে দেশে ফিরে কৃষক বাবার সঙ্গে কৃষিকাজ শুরু করেন। লোকমান বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর বিদেশে ছিলাম। সেখানে অনেক পরিশ্রমের কাজ করতে হতো। এ কারণে দেশে ফিরে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজ শুরু করি। ধান চাষের পাশাপাশি বাড়ির পাশে পতিত জমিতে বিভিন্ন সবজি ও ফলমূলের চাষাবাদ শুরু করি। সাধারণত গ্রীষ্ম মৌসুমে তরমুজের আবাদ হয়ে থাকে। পরীক্ষামূলকভাবে বর্ষা মৌসুমে ৫ শতাংশ জমিতে হাইব্রিড জাতের তরমুজ ও ফুটি আবাদ করেছি। এবারও ভালো ফল হয়েছে। এই মৌসুমে পোকার আক্রমণ কম থাকায় কীটনাশক খরচও কম হয়েছে। সেই তুলনায় লাভ ভালো হয়েছে।’

লোকমানের দাবি, এর আগেরবার মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় এক লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। চলতি বছরও ওই ৫ শতাংশ জমিতে এক লাখ টাকার মতো লাভ হতে পারে। ভবিষ্যতে আরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করার ইচ্ছা তাঁর।

লোকমান এখন প্রেরণা

অসময়ে তরমুজ চাষের খবর ছড়িয়ে পড়লে দূরদূরান্ত থেকে লোকমানের তরমুজখেত দেখতে আসছেন অনেকেই। তাঁর সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন স্থানীয় বেকার ও তরুণ চাষিরা। তাঁদের একজন স্নাতকোত্তর করা কালাইয়া গ্রামের এম এ হান্নান (২৬)। তিনি বলেন, আর চাকরির পেছনে ছুটবেন না। ইতিমধ্যে মাছ চাষ শুরু করেছেন। লোকমানের পরামর্শ নিয়ে তরমুজ চাষেও মন দেবেন।

মো. রিপন মিয়া (৩২) নামের এক কৃষক বলেন, তিনি গ্রীষ্ম মৌসুমে তরমুজ আবাদ করেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমেও যে তরমুজ চাষ করা যায়, তা জানা ছিল না। ভবিষ্যতে তিনিও বর্ষা মৌসুমে তরমুজের আবাদ করবেন।

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন বলেন, অসময়ে তরমুজ চাষ অনেক লাভজনক। এ সময়ে বাজারে তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকে। তরমুজ খেতে রোগবালাই কম থাকায় খরচ কম, লাভ হয় বেশি। লোকমানের তরমুজ চাষে সফলতার খবরে তিনি আনন্দিত। তাঁকে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।