রংপুরের কণ্ঠ

নীরবতা ভাঙার প্রত্যাশায়

নীরবতা ভাঙার প্রত্যাশায়
মিঠু ভাই

প্রিয় মিঠু ভাই (মীর আনোয়ার আলী)

অনেকদিন হলো আপনাকে লিখি না, বলি না, এমনকি সামনে দাঁড়িয়ে একবার চোখাচোখিও হয় না। অথচ কী আশ্চর্য—আপনি তো আমার খুব প্রিয় ছিলেন, খুব কাছেরও। এইতো কয়েক মাস আগেও আমাদের যে সখ্য, যে উষ্ণতা ছিল, সেটা কোনোদিন কল্পনাও করিনি হারিয়ে যাবে।

আমরা দুজনেই একই পেশায়—কলম, খবর, কাগজ আর মানুষের জীবন নিয়ে নিত্যকার লড়াই করছি একই শহরে থেকেও কতদিন হলো আমাদের দেখা হয়নি। অথচ দেখা না হওয়ার কোনো বাধা ছিল না, ছিল না কোনো অচলাবস্থা—ছিল শুধু নীরব দূরত্ব, অকারণ এড়িয়ে চলা।

আমি কি আপনার কিছু কষ্টের কারণ হয়ে গেছি, নাকি সময়ই আমাদের ফাঁকটা বানিয়ে দিয়েছে—আজও বুঝতে পারিনি। ভেবেছি, ফোন দেব; লিখব; হঠাৎ সামনাসামনি গিয়ে দাঁড়াব। কিন্তু পারিনি। হয়তো গোপন এক অহংকার আমাকে আটকে রেখেছে, অথবা অকারণ ভয়ে ভুগেছি—আপনি হয়তো আর আমায় দেখতে চান না।

মিঠু ভাই, অভিমান থাকে, ভুল বোঝাবুঝি হয়, জীবন আমাদের টেনে নিয়ে যায় নানা দূরত্বে। কিন্তু এভাবে চুপচাপ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কি মানায়?

আমাদের পেশা একই, স্বপ্ন একই, শহরও একই—কেবল আমরা দুজন আলাদা হয়ে গেলাম। এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়।

আপনি যদি কখনো এই চিঠি পড়েন, জানবেন—আমি এখনো আপনাকে মনে করি, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় ধরে রাখি। হয়তো সময়ের এক ফাঁকে আবার কোথাও দেখা হয়ে যাবে। তখন হয়তো কিছু বলার দরকার হবে না, একটুখানি হাসি—সেটাই যথেষ্ট হবে।

তবু আজকের মতো লিখে রাখলাম—আপনার জন্যে আমার অনুযোগ, আক্ষেপ, আর নিরুপায় ভালোবাসা।