রংপুর অঞ্চলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। বজ্রপাতসহ ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তাসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে বেড়েছে পানি। এ কারণে তিস্তা পাড়ে দেখা দিয়েছে বন্যা আতঙ্ক। সেখানকার ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড হয়েছে ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমা বরাবর প্রবাহিত হচ্ছে।
ফলে কিছু কিছু এলাকায় উজান থেকে ধেয়ে আসা ঢলে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে ঢুকে পড়েছে। এতে চরাঞ্চলে চাষ করা বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। কোথাও কোথাও হাঁটু পানিতে ডুবে আছে ঘর-বাড়িসহ উঠতি ফসল। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে বন্যায় রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে জেলার ৫ উপজেলার নদী তীরবর্তী ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে পাউবো।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানির পরিমাপ কর্মচারী নুরুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টা থেকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুপুর ১২টার পর বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে।
গড্ডিমারি ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, সকাল থেকে তিস্তার পানি বাড়ছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হলে অত্র এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ড তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থিত। তিস্তার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানে বন্যা দেখা দেয়। নদী পাড়ের মানুষের সার্বক্ষণিক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় উজানে ভারী বৃষ্টিপাত কিছুটা কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে বৃষ্টিপাত বেশি হলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে তিস্তাপাড়ের মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি।