বেনাপোলে ৩ কোটি টাকার গার্মেন্টস পণ্য আটক
বেনাপোল বন্দরে কাগজপত্রবিহীন উন্নতমানের গার্মেন্টস পণ্য আটক করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বন্দরেরে ১৭ নং শেড থেকে ট্রাকে লোড করার সময় এ পণ্য চালান জব্দ করা হয়। আটককৃত পণ্য চালানটির মূল্য তিন কোটি টাকা।
চালানটিতে সরকারের প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছিল বলে কাস্টমস সূত্রে জানা যায়।
সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে আসা পণ্য চালানটি বন্দরের ১৭ নং শেড ইনচার্জ আব্দুল মতিনের সহযোগিতায় ভারতীয় ট্রাক থেকে আনলোড করা হয়। এরপর আজ সকাল ১০টার দিকে কাগজপত্রবিহীন পণ্যচালানটি খুলনা মেট্রো-ট ১১-২১৬৭ নং কাভার্ডভ্যানে লোড করার সময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আটক করে।
সরেজমিনে বন্দরের ১৭ নং শেডে গিয়ে দেখা যায়, উন্নত মানের গার্মেন্টস পণ্য শাড়ি থ্রি-পিস, প্যান্টের পিস, বোরখার কাপড়, সোফার কভার এসব পণ্য কাভার্ডভ্যানে লোড করা হচ্ছে। এ সময় গোপন সংবাদে কাস্টমসের একটি দল ওই শেডে অভিযান পরিচালনা করে পণ্যচালানটি আটক করে। তবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব পণ্যের স্বপক্ষে কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
এবিষয়ে ১৭ নং শেড ইনচার্জ মতিন বলেন, এই পণ্য কার আমি জানি না। কীভাবে শেডে নামল তাও আমি বলতে পারি না। শেডের চাবি থাকে শেড ইনচার্জের কাছে তাহলে এই অবৈধ পণ্যচালানটি আনুষ্ঠানিকতা শেষে কীভাবে বন্দরে প্রবেশ করল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার এখানে প্রান্ত নামে একজন এনজিও কর্মী থাকে তিনি মিয়ান নামে একটি সিএন্ডএফ এজেন্সির বর্ডারম্যান আব্দুল্লাহর সহযোগিতায় শেডে পণ্য আনলোড করে আমার অনুপস্থিতিতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থলবন্দরের কার্গো শাখা থেকে জানা যায়, বেনাপোল সিএন্ডএফ এবং এ্যাসোসিয়েশনের বইয়ের তালিকায় ওই সিএন্ডএফ এজেন্সির নাম নেই বা তাদের কোন অফিসও নেই এবং আব্দুল্লাহ নামে কোন বর্ডারম্যানও নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোলের একটি চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। চক্রটি জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে স্থলবন্দর ও কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ভারত থেকে পণ্য আমদানি করে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন কিছু অসাধু আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট মালিক।
পণ্য চালানটি পরীক্ষণের সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা বলেন, কী পরিমাণ পণ্য আছে, তা ওজন করে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানা যাবে। আমদানিকৃত এসব পণ্যর কোন বৈধ কাগজপত্র বা পণ্যের কোনো মালিকও পাওয়া যায়নি।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক রাশেদুল সজিব নাজির জানান, আটককৃত অবৈধ পণ্য চালানটির বিষয়ে কাস্টমস তদন্ত করছেন। তবে বন্দরের কারো দায়িত্ব পালনের অবহেলা থাকলে তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডেস্ক রিপোর্ট / আরকে